পরীক্ষা না নেয়ায় শিক্ষকের মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ
পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বনওয়ারীনগর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাজিব কুমার সরকার নামে এক সহকারী শিক্ষককে ইট মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতা মো. নয়নসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর উপজেলার বনওয়ারীনগর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।আহত শিক্ষককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে মাথায় ছয়টি সেলাই দিতে হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা না নেওয়াকে কেন্দ্র করে বাগবিতণ্ডার জেরে ওই শিক্ষকের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় যুবদল নেতা ও তার সহযোগীরা। উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নয়ন কাজী ও তার সহযোগীরা ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক ও অভিভাবকেরা।স্থানীয় অভিভাবক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলছে। কিন্তু শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করছিলেন। সকালে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে গেলে তাদের প্রধান ফটক থেকে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেন শিক্ষকরা। মূলত এটিকে কেন্দ্র করে অভিভাবকদের সাথে বাগবিতণ্ডার জের ধরে ওই শিক্ষককে আঘাত করা হয়েছে।আহত শিক্ষক রাজিব কুমার সরকার বলেন, যেহেতু সারা দেশে সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলন চলছে, আমরা প্রতিদিনের মত স্কুলে এসে কর্মসূচি পালন করছিলাম। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিতে চাইছিলেন। সকল শিক্ষক সেটিতে অসম্মতি জানান। তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে না জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ডেকে এনে পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করেন। ইউএনও স্যার আমাদের শিক্ষকদের বেশ অপমান করেছেন। উপজেলার আন্দোলনরত সমস্ত স্কুলের শিক্ষকরা বিষয়টি জানতে পেরে মডেল স্কুলে উপস্থিত হন। দুপুরে হঠাৎ করেই বহিরাগত স্থানীয় ৫/৭ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ স্কুলে প্রবেশ করে আমাদেরকে হুমকি ধামকি দেন। এসময় পেছন থেকে একজন ইট দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করেন। যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা দরকার।ঘটনার অভিযুক্ত উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক মো. নয়ন বলেন, পরীক্ষা না নেয়া ও শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের ক্লাস রুমে আটকে রেখেছিলো শিক্ষকেরা। বিষয়টি জানার পরে আমাদের উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আলী হোসেনসহ এলাকার লোকজন সবাই মিলে স্কুলে গিয়ে তালা ভেঙে সবাইকে উদ্ধার করা হয়। কে বা কারা ওই শিক্ষককে মেরেছে আমরা জানি না।এ ঘটনার বিষয়ে ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, স্কুলের ভেতরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আটকে রেখেছিলো আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। পরে স্থানীয় মানুষ অভিভাবকেরা একত্রিত হয়ে সেখানে গিয়ে বাচ্চাদের উদ্ধার করে।তিনি আরও জানান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ পরিস্থিতি খারাপ জেনে সেখানে গিয়েছিলাম আমরা। একজন শিক্ষক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে কারা তাকে আহত করেছে সেটা জানি না। এই ঘটনায় থানাতে কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি কেউ। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।