র্যাগিংয়ের অভিযোগে গবির ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার
নিজস্ব প্রতিবেদক: গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মধ্যরাতে বাসা থেকে মেসে ডেকে এনে র্যাগিং এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে আটজন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।২৬ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য-সচিব কনক চন্দ্র রায় এই আটজনকে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, "এই ঘটনায় ইতোমধ্যে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে যে আট শিক্ষার্থীর নাম উঠে এসেছে, সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।"সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন—আইন বিভাগের অন্তু দেওয়ান (২৭ ব্যাচ), আসাদুর রহমান (৩২ ব্যাচ), আশরাফুল ইসলাম (৩২ ব্যাচ), তরিকুল ইসলাম (২৭ ব্যাচ), মেহেদী হাসান (২৮ ব্যাচ), নাঈম (৩২ ব্যাচ), মেহেদী (৩২ ব্যাচ) এবং আসিফ রহমান লাবিব (২৮ ব্যাচ)।জানা যায়, গত ২৪ নভেম্বর মধ্যরাতে আশুলিয়ার নলাম এলাকার একটি মেসবাড়িতে ডেকে নিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শের আলীকে (৩৩ ব্যাচ) র্যাগিং এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। আহত শিক্ষার্থী শের আলী রংপুরের পীরগঞ্জের মাহমুদপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি আশুলিয়ায় একটি মেসবাড়িতে ভাড়া থেকে থাকেন। আহত অবস্থায় পরবর্তীতে শিক্ষার্থীটিকে চিকিৎসার জন্য সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তার সহপাঠীরা জানান, সোমবার বিকেলে শের আলী ও তার সহপাঠীরা খিচুড়ি রান্নার উদ্দেশ্যে অভিযুক্ত আসাদের মেসে যান। এক পর্যায়ে আসাদ শের আলী ও মাহিম নামের আরেকজনকে পেঁয়াজ কাটতে বলেন। শের আলী পেঁয়াজ কাটতে অপারগতা জানালে অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী আশরাফুল বিষয়টি নিয়ে শের আলীকে ধমক দিয়ে মারধরের ভয় দেখালে শের আলী সেখান থেকে নিজের মেসে চলে যান। এরপর পুনরায় শেরআলীকে মেসে ডেকে নিয়ে রাত ১২ টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে শের আলী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার সহপাঠীরা সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।এই ঘটনার পরদিন ২৫ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে শের আলীর সহপাঠীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এবং জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে তারা আইন বিভাগের প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর জড়িতদের বিচারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।অন্যদিকে ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনা তদন্তে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে আইন বিভাগের শিক্ষকদের সমন্বয়ে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সমন্বয়ে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।