নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুই কর্মচারীর গরুর খামার
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) নিষেধাজ্ঞা অমান্য ও চাকরির আচরণবিধি ভঙ্গ করে দেশের বহুল আলোচিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পাশেপাশের এলাকায় অর্থ লগ্নি করে গরুর খামার ব্যবসা করছেন কোম্পানিতে কর্মরত কর্মচারীরা। প্রকল্পে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ স্থানীয়দের লোভনীয় অফার দিয়ে তাদের খামারে অর্থ বিনিয়োগ করার জন্য লিফলেট ছাপিয়ে প্রচারণাও চালাচ্ছেন তারা।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহাদৎ হোসেন ও মহিদুল ইসলাম রূপপুর এনপিপির এনপিসিবিএল কোম্পানিতে টেকনিশিয়ান পদে কর্মরত রয়েছেন। এই দুজন তাদের বেশ কয়েকজন সহকর্মীদের নিয়ে ২০২৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের এলবাস কাউন্সিলারের বাড়ির পাশে ১০-১২ বিঘা জমি লিজ নেন। সেখানে গড়ে তুলেছেন ‘মা-বাবার দোয়া এগ্রো এন্ড ডেইরি ফার্ম’। খামারে ১০টি উন্নতজাতের গাভী কিনে পালন করা হচ্ছে। এই গরু দেখিয়ে স্থানীয় লোকজনসহ তাদের সহকর্মীদের খামারে বিনিয়োগ করাচ্ছেন তারা। আর সেই টাকা দিয়ে ঢাকায় নিজের নামে শাহাদৎ হোসেন কিনেছেন বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট।এবিষয়ে ‘মা বাবার দোয়া এগ্রো এন্ড ডেইলি ফার্ম’ এর কর্মচারী বিষ্ণু বলেন, আমার বাড়ি দিনাজপুরে। খামার মালিক শাহাদতের প্রতিবেশী। খামারটির মালিক রূপপুর প্রকল্পের কর্মচারী শাহাদৎ হোসেন ও মহিদুল ইসলাম। আমি খামারের গরুগুলোর দেখাশোনা করি।শাহাদতের মামা ‘মা বাবার দোয়া এগ্রো এন্ড ডেইলি ফার্ম’ এর মালিক দাবিদার মো. আবু জাহেদ বলেন, খামারটির মালিক আমি। তবে টাকার উৎস কী এবং কীভাবে তিনি ঈশ্বরদীতে গরুর খামার গড়ে তুললেন সেই বিষয়ে সদত্তোর দিতে পারেননি আবু জাহেদ।এবিষয়ে খামারটির প্রতিষ্ঠাতা রূপপুর এনপিপির এনপিসিবিএল কোম্পানির টেকনিশিয়ান শাহাদৎ হোসেন বলেন, আমি রূপপুর প্রকল্পে চাকরি করি। চাকরিবিধি ও সময়ের কারণে খামারটি আবু জাহেদ এর নামে করা হয়েছে। ঈশ্বরদী পৌরসভা ও উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় থেকে নেওয়া হয়েছে নিবন্ধন। ছুটির দিন ও অফিস সময়ের পরে এসে আমি সময় দেই।তিনি আরও বলেন, খামারটি বড় করার জন্য সহকর্মীদের অর্থ বিনিয়োগ করানো হচ্ছে। স্থানীয়দের নিকট থেকেও খামারে বিনিয়োগ নেওয়া হচ্ছে। যা শরিয়ত মোতাবেক পরিচালিত হবে।রূপপুর এনপিপির এনপিসিবিএল কোম্পানির প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এনপিসিবিএল কোম্পানিতে কর্মরত কর্মকর্তা বা কর্মচারী বাইরে কোন ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবসা করতে পারবে না। চাকরিতে যোগদান ও বিভিন্ন সভায় এ ব্যপারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া রয়েছে। শাহাদৎ ও মহিদুলের মতো আরও অনেকেই রূপপুরে চাকরিতে এসে গাড়ির ব্যবসা, জমি ক্রয়-বিক্রয়, প্রকল্পের ভিতরে নামে-বেনামে ব্যবসা করছে বলে জানা গেছে। এসব বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।