রাজশাহী ব্যুরো: চলতি বছরের শুরুতেই তীব্র সার সংকটে পড়েছেন রাজশাহীর কৃষকরা। বিশেষ করে আলু চাষিরা পড়েছেন বড় বিপাকে। সার কিনতে ডিলারের দোকানের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন চাষিরা। কিন্তু সরকারি মূল্যে সার পাচ্ছেন না।

তবে অতিরিক্ত টাকা দিলে আবার অনেকেই পাচ্ছেন সেই সার। প্রতি বস্তা এক হাজার ৫০ টাকা দামের ডিএপি সার মিলছে এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায়। টিএসপি কোথাও মিলছে না। সামনের মাসের বরাদ্দ না আসা পর্যন্ত কোনো ডিলারই টিএসপি দিতে পারছেন না।


বস্তাপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি দিলে মিলছে এসব সার। ফলে আলুচাষিরা পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায়। আলু চাষে খরচও বাড়ছে কৃষকদের।
পবার দামকুড়া বাজারের সার ডিলার নজরুল ইসলাম জানান, সংকটের কারণে কৃষকদের চাহিদা মতো সার দিতে পারছেন না তিনি।
ডিসেম্বর মাসের নতুন বরাদ্দ পেলে আবার টিএসপি ও ডিএপি সার দিতে পারবেন।
একই অবস্থা তৈরি হয়েছে জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই। পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাগমারা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় ডিএপি সার পাওয়া গেলেও মিলছে না টিএসপি সার। ফলে এসব উপজেলায়ও আলুচাষিরা এখন বেকায়দায় পড়েছেন। টিএসপি ও এমওপি সার সংকটের কারণে আলু চাষ শুরু করতে পারছেন না অনেক কৃষক।
রাজশাহীর কৃষক সাইফুল ইসলাম মিরু বলেন, ‘সরকারি দরে টিএসপি ও ডিএপি সার কীভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বস্তাপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা অতিরিক্ত দিলে পাওয়া যাচ্ছে সার।’
তানোর উপজেলা প্রতিনিধি টিপু সুলতান জানান, সার কিনতে প্রতিদিন কৃষকরা ডিলারের দোকানের সামনে লাইন ধরছেন। কিন্তু চাহিদামতো সার পাচ্ছেন না। অনেকেই খালি হাতে ঘুরে চলে যাচ্ছেন।
মোগাছি এলাকার আজগর আলী বলেন, ‘ডিলার অতিরিক্ত দামে বাইরে সার বিক্রি করে দিচ্ছেন। ডিলারদের অতিরিক্ত টাকা দিতে চাইলে গোপনে সার দিচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
সার ডিলার মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষকদের চাহিদা মোতাবেক সার দিতে পারছি না। যে বরাদ্দ দেয়, তা দিয়ে কৃষকদের মন রক্ষা করা যাচ্ছে না। আমরা কী করব! সরকার যেভাবে দেয়, আমরা সে মোতাবেক সবার মাঝে বিতরণ করি। বেশি দামে সার বিক্রি করার প্রশ্নই আসে না।’
দুর্গাপুর প্রতিনিধি গোলাম রসুল জানান, দুর্গাপুরে ডিএপি ও ইউরিয়া সার পাওয়া গেলেও মিলছে না টিএসপি সার।
খুচরা সার বিক্রেতা শাহ আলম দাবি করেন, ‘আমরা তুলনামূলক সার পাচ্ছি না। পেলেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যার কারণে বেশি দামে সার বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের কাছে।’
সার সংকটের বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা পারভিন লাবনী বলেন, ‘বেশি দামে সার কেনার বিষয়টি আমার জানা নেই। সার সংকট না হওয়ারই কথা। যেহেতু আলু চাষ পুরোদমে শুরু হয়নি। তবে কৃষিজমি বাদে পুকুরে সার প্রয়োগ করায় এ সংকট দেখা দিতে পারে।’
এদিকে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নভেম্বর মাসে জেলায় ২২০ জন ডিলারের মাঝে সাত হাজার ৩০৭ টন ইউরিয়া, তিন হাজার ১৮৬ টন টিএসপি, সাত হাজার ৮৩৯ টন ডিএপি ও পাঁচ হাজার ৬৩৭ টন এমওপি সার বরাদ্দ দেওয়া হয়। আনুমানিক ১৬ হাজার কৃষকের জন্য বরাদ্দ অনুযায়ী প্রায় সব ডিলারই অধিকাংশ সার উত্তোলন করেছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available